No item in cart.
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুনিয়ায় মদ পান করেছে অতঃপর তা-থেকে তওবা করে নি, সে আখিরাতে তা-থেকে বঞ্চিত থাকবে।[মুসলিম ৩৬/৮, হাঃ ২০০৩, আহমাদ ৪৬৯০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬২)
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ لَمْ يَتُبْ مِنْهَا حُرِمَهَا فِي الآخِرَةِ.
তিনি বলেন, ইস্রা (মি’রাজের) রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে শরাব ও দুধের দু’টি পেয়ালা পেশ করা হল। তিনি উভয়টির প্রতি লক্ষ্য করলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করলেন। তখন জিব্রীল (‘আঃ) বললেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহ্র জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত দ্রব্যের দিকে পথ প্রদর্শন করেছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করতেন তাহলে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত। [৪৮]
যুহরী (রহঃ) থেকে মা’মার, ইবনু হাদী, ‘উসমান ইবনু ‘উমর ও যুবায়দী এরকম বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৩)
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّه“ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِه„ بِإِيلِيَاءَ بِقَدَحَيْنِ مِنْ خَمْرٍ وَلَبَنٍ فَنَظَرَ إِلَيْهِمَا ثُمَّ أَخَذَ اللَّبَنَ فَقَالَ جِبْرِيلُ الْحَمْدُ للهِ÷ الَّذِي هَدَاكَ لِلْفِطْرَةِ وَلَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ تَابَعَه“ مَعْمَرٌ وَابْنُ الْهَادِ وَعُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ وَالزُّبَيْدِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ.
[৪৮] বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO) মাদক দ্রব্যের এক আন্তর্জাতিক শ্রেণী বিন্যাস করেছে। সেটা হল: নারকটিক জাতীয়ঃ হেরোইন, মরফিন, আফিম, পেথিডিন, কোডিন (ফেনসিডিল), মেথাডন। বারবিচুরেট জাতীয়ঃ ফেনোবারবিটন,পেনটোবারবিটন। প্রশান্তিদায়ক ঔষধঃ ডায়াজেপাম, নাইট্রাজেপাম, ক্লোবাজম, লরাজেপাম ইত্যাদি। মদ জাতীয়ঃ বিয়ার, ব্রান্ডি, হুইসকি, ভদকা, রাম, বাংলা মদ, তাড়ি, জিন রেকটিফাউড স্পিরিট, ৫% এর অধিক এলকোহলযুক্ত যেকোন তরল পদার্থ ইত্যাদি।
স্নায়ু উত্তেজক মাদকঃ ক্যানাবিস জাতীয়ঃ গাঁজা, মারিজুয়ানা, ভাং, হাশিশ, চরস, সিন্ধি। এমফেটামিন জাতীয়ঃ রিটালিন, ডেকসোড্রিন, মেথিড্রিন। কোকেইন জাতীয়ঃ কোকেইন বড়ি, নস্যি বা পেস্ট। মায়াবিভ্রম উৎপাদনকারী মাদকঃ এলএসডি, মেসকেলিন।
বিবিধ মাদকদ্রব্যঃ তামাক জাতীয়ঃ বিড়ি চুরুট, সিগারেট,হুক্কা , জর্দা, সাদাপাতা, খৈনী, দাঁতের গুল, নস্যি, ভিক্স ইত্যাদি। মরফিন ধরনের ঔষধ দেহের যন্ত্রনা কমায় ও ঘুম পাড়ায় খুব তাড়াতাড়ি। ঘুমের তথাকথিত দেবতা “মারফিউস” এর নাম অনুসারে এর নাম রাখা হয় মরফিন। এ থেকেও আরো শক্তিশালী যন্ত্রনা কমানোর ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে যেমন হেরোইন। এটা কখনো বাদামী রং এবং কখনো সাদা রং এর পাউডার এর হিসেবে পাওয়া যায়। মরফিন এবং হেরোইন ধুমপানের সঙ্গে কিংবা নাকের ভিতর দিয়ে টেনে বা রক্তনালীর মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশার কাজে ব্যবহার করা হয়।
মাদকদ্রব্য সেবনে কী কী ক্ষতি হয়ঃ
দৈহিক ক্ষতিঃ রক্তহীনতা, ক্ষুদামন্দা, অপুষ্টি, যক্ষা, ফুসফুসের পানি জমা, নিউমুনিয়া, হৃদরোগ, গেস্ট্রিক আলসার,প্যাংক্রিয়াসের অসুখ,পরিপাক যন্ত্র থেকে রক্ত ক্ষরণ, লিভারে প্রদাহ, জন্ডিস, লিভার সিরুসিস,ক্যানসার, কিডনি রোগ ( নেফ্রটিক সিনড্রম), টিটেনাস, মৃগীরোগ, মাংসপেশীতে অসুখ, স্নায়ুতন্ত্রের গোলযোগ, মস্তিষ্ক বিকল, দৃষ্টিহীনতা (অপটিকস নিউরাইটস), যৌনরোগ, এইডস, মাসিকের অনিয়ম, বন্ধাত্ব, বিকলাঙ্গ সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা। সড়ক দুর্ঘটনা জনিত মাথায় আঘাত ও অন্যান্য জটিল আঘাত, চর্মরোগ, শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা হ্রাস, বিষক্রিয়া (সেপটিসেমিয়া), মৃত্যু।
মানসিক ক্ষতিঃ উশৃংখল ও অসংলগ্নতা আচরণ, উত্তেজনা, খিটখিটে মেজাজ, অনিদ্রা, স্মৃতিবৈকল্য, চিন্তার অসংলগ্নতা, চরম স্বার্থপরতা, শিক্ষাজীবনের ব্যহতি, কর্মদক্ষতার অবনতি, নিরুৎসাহ, উদাসীনতা, দয়ামায়াহীনতা, হতাশা, অবসাদ, বিষন্নতা, আত্মহত্যার প্রবনতা, গুরুতর মানসিক ব্যাধি, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, মিথ্যুক ও অধার্মিক হওয়া।
পারিবারিক ক্ষতিঃ পারিবারিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, নানাবিধ অশান্তি সৃষ্টি, সম্পর্কের অবনতি, বৈবাহিক জীবন দুঃসহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, পরিবারের মর্যাদাহানি, অধিক দেউলিয়াপনা এবং নিত্য ব্যবহার্য গৃহস্থালী দ্রব্য বিক্রি করা।
সামাজিক ক্ষতিঃ অপরাধমূলক আচরণ চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, ছিনতাই সন্ত্রাস, মাস্তানী, হত্যা ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত থাকা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা, সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, বন্ধুবান্ধব ও আত্নীয়স্বজন থেকে বারবার টাকা ধার নেয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে প্রায়ই অনুপস্থিতি, চাকুরী হারানো, উৎপাদন বিমুখ হওয়া, বেকার হওয়া, সমাজে অপাংক্তেয় হওয়া।
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে এমন একটি হাদীস শুনেছি যা আমি ছাড়া আর কেউ তোমাদের বর্ণনা করবে না। তিনি বলেন, কেয়ামতের কতক নিদর্শন হলঃ অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে, ইল্ম (দ্বীনী) হ্রাস পাবে, ব্যভিচার প্রকাশ হতে থাকবে, মদ্যপান ব্যাপক হবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে আর নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে, এমনকি পঞ্চাশ জন নারীর পরিচালক হবে একজন পুরুষ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৪)
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ قَالَ سَمِعْتُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثًا لاَ يُحَدِّثُكُمْ بِه„ غَيْرِي قَالَ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يَظْهَرَ الْجَهْلُ وَيَقِلَّ الْعِلْمُ وَيَظْهَرَ الزِّنَا وَتُشْرَبَ الْخَمْرُ وَيَقِلَّ الرِّجَالُ وَيَكْثُرَ النِّسَاءُ حَتّٰى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً قَيِّمُهُنَّ رَجُلٌ وَاحِدٌ.
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ব্যভিচারী ব্যভিচার করার সময়ে মু’মিন থাকে না, মদ পানকারী মদ পান করার সময়ে মু’মিন থাকে না। চোর চুরি করার সময়ে মু’মিন থাকে না।
ইবনু শিহাব বলেনঃ ‘আবদুল মালিক ইবনু আবূ বক্র ইবনু হারিস ইবনু হিশাম আমাকে জানিয়েছে যে, আবূ বকর (রাঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি বলেন, আবূ বক্র উপরোক্ত হাদীসের সাথে এটিও যোগ করতেন যে, মূল্যবান জিনিস, যার দিকে লোকজন চোখ উঁচিয়ে তাকিয়ে থাকে, ছিনতাইকারী তা ছিনতাই করার সময়ে মু’মিন থাকে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৫)
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ وَابْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُوْلاَنِ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُحَدِّثُه“ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ثُمَّ يَقُوْلُ كَانَ أَبُو بَكْرٍ يُلْحِقُ مَعَهُنَّ وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً ذَاتَ شَرَفٍ يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ أَبْصَارَهُمْ فِيهَا حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ
তিনি বলেন, মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে এমন অবস্থায় যে, মদীনায় আঙ্গুরের মদের কিছু অবশিষ্ট ছিল না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৬)
الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ حَدَّثَنَا مَالِكٌ هُوَ ابْنُ مِغْوَلٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ لَقَدْ حُرِّمَتْ الْخَمْرُ وَمَا بِالْمَدِينَةِ مِنْهَا شَيْءٌ.